ডেস্ক নিউজ:

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে চারদিনের সফরে ঢাকা থেকে রওনা দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার সকাল ১০টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা করবেন তিনি। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই সফরকে কেন্দ্র করে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

দলটির নেতারা জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতা ও সরকারের নানা চাপের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন ঢাকার বাইরে যেতে পারেননি। অনেক দিন পর ঢাকার বাইরে যাওয়ার সুযোগ পেলেন। এই সফরের মাধ্যমে দলীয় কর্মসূচিও বাস্তবায়নের বিষয়টিও মাথায় রাখবেন বেগম জিয়া।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ কোন্দ্বল মেটানোর পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মনোবল আরও বাড়াতে খালেদা জিয়ার এই সফর সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন তারা।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানাবেন। বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়িবহর থামিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের আড়ালে কক্সবাজার যাওয়ার পথে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলো নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। আগামী নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার যাতে এসব এলাকায় আর যেতে না হয় সে দিকটিও বিবেচনায় রাখা হতে পারে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার এই সফরকে বাস্তবায়ন করতে গত এক সপ্তাহ ধরে ঘাম ঝরাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতা। এমন এক নেতা দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ম্যাডামের সফর সফল করতে শুক্রবারই তিনিসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসসহ কয়েকজন নেতা কক্সবাজারে গিয়ে পৌঁছেছেন।

দলটির নেতারা বলছেন, এই সফরের মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে যারা পালিয়ে এসেছে তাদের খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল আরও চাঙ্গা হবে। সংগঠন গতিশীল হবে। যার প্রভাব রাজপথের আন্দোলন এবং জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে।

খালেদা জিয়ার সফর প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, অনেকদিন ধরে নেতাকর্মীরা নেত্রীকে কাছে পাননি। তাকে কাছে পাওয়ার জন্য অসংখ্য নেতাকর্মী উদগ্রীব হয়ে আছেন। খালেদা জিয়ার এই সফরে নেতাকর্মীদের মনোবল অবশ্যই চাঙ্গা হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী। তিনি যেখানেই যান জনস্রোতের সৃষ্টি হয়। আমাদের নেত্রীর মূল উদ্দেশ্য হলো আর্তমানবতার সেবায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো।

বিএনপি চেয়ারপারসন যখনই জনতার কাছে যান দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীরা উজ্জ্বীবিত হয়ে ওঠেন বলে মন্তব্য করেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম। তিনি মনে করেন চেয়ারপারসনের গাড়িবহরের কারণে সড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন ঢাকার বাইরে যেতে পারেননি। বিএনপির বাতিঘর হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। বেগম জিয়া যেখানে যান বিএনপি শুধু চাঙ্গাই হয় না, নেতাকর্মীরা নতুন জীবন ফিরে পান। যতগুলো জেলা দিয়ে তিনি কক্সবাজারে যাবেন কেবল সেসব জেলাই নয়, পুরো দেশবাসী ম্যাডামের এই সফরে উজ্জ্বীবিত হবে।